গত ২০২২ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর সেন্ট্রাল জু আথারিটি দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কে দেশের অন্যতম চিড়িয়াখানা হিসেবে ঘোষণা করে। দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানা ইতিমধ্যেই ক্যাপটিভ বৃডিং বা কৃত্রিম প্রজননের জন্য শুধু দেশে নয় এশিয়া মহাদেশেও সমাদৃত। ১৯৫৮ সালে এই চিড়িয়াখানাটি স্থাপিত হয়। ১৯৭৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই চিড়িয়াখানার নাম করেন পদ্মজা নাইডু জুলজিকাল পার্ক। মোট ৬৭.৫৬ একরের ওপর ৭০০০ ফিট উচ্চতায় এই চিড়িয়াখানাটি গড়ে উঠেছে।

দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায় রেড পান্ডা, তিব্বতি ভাল্লুক ও স্নো লেপার্ড এর কৃত্রিম প্রজনন অত্যন্ত সাফল্যের সাথে হয়। মূলত দেশ ও বিদেশের দর্শকরা রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড, টিবেটিয়ান উলফ হিমালয়ান থাড়, ব্লু শিপ, স্যালাম্যান্ডার ইত্যাদি প্রাণী দেখার জন্য ছুটে আসেন। মোট ১৬০ রকম প্রজাতির বিভিন্ন বন্যপ্রাণী এখানে আছে।
বিশেষ করে রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড যখন প্রায় লুপ্ত হতে বসেছে তখন এই দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড, টিবেটিয়ান উলফ কৃত্রিম প্রজনন করে সংরক্ষন করা শুরু হয়। এখানকার রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড এবং টিবেটিয়ান উলফ দেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে রেড পান্ডার কৃত্রিম প্রজননে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসার পর সিঙ্গালিলা পার্কে বেশকিছু রেড পান্ডা কে ছেড়ে আসা হয়েছে।

দার্জিলিং শহর চিরকালই পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয়। স্বাভাবিকভাবেই দার্জিলিং ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে এই চিড়িয়াখানা কখনোই বাদ যায় না। বছরে প্রায় ৫ লক্ষের মতন দর্শক এই চিড়িয়াখানায় আসে। এর আগেও ২০১৪ সালে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা আন্তর্জাতিক সন্মান “দ্যা আর্থ হিরোস” হিসাবে শিরোপা পেয়েছিল।

সম্প্রতি দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষর তত্বাবধানে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে চারটি রেড পান্ডার জন্ম দেয়। তবে দেশের প্রথমবার এই রেড পান্ডা কৃত্তিম প্রজননের মাধ্যমে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় নয়, সিঙ্গালিলা পার্কের বনাঞ্চলে প্রজনন হয়েছে। শাবকদের ওই বনাঞ্চলেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষর নজরদারিতে আছে। শুধু রেড পান্ডাই নয়, সম্প্রতি এই চিড়িয়াখানার সবচেয়ে বয়স্ক ১৩ বছর বয়সি তুষার চিতা বা স্নো লেপার্ডও একটি শাবকের জন্ম দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.