শুধুমাত্র বর্ষাকালেই নয় বারো মাস চাষ করা যাবে শীতকালীন সবজি। টেম্পোরারি পলি হাউস তৈরি করে শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন ধূপগুড়ি ব্লকের গদেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুর্শামারি এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক। এখন আর হিমঘরে মজুদ করা শাকসবজি নয় ,সরাসরি মাঠ থেকে শীতকালীন সবজি পৌঁছে যাবে পাতে। পালং শাক ধনেপাতা থেকে শুরু করে শীতকালীন অন্যান্য সবজি চাষ করা হচ্ছে পলি হাউস তৈরি করে। ধূপগুড়ি ব্লক কৃষি দপ্তরের সহযোগিতায় এবং তাদের পর্যবেক্ষনে গ্রীষ্ম এবং বর্ষার সময় শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষ্ণ রায় প্রথমে তার আধা বিঘা জমিতে টেম্পোরারি পলি হাউস করে শুরু করেছিল এই চাষ। গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষাকালে আদৌ এই সবজি চাষের পরিকল্পনা কতটা ফলপ্রসু হবে সেই নিয়ে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সন্দেহ থাকলেও পরবর্তীতে তার ধারণা বদলে যায়। আর এই কারণেই চাষের জমির পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়েছে। কৃষ্ণ রায়ের এই সাফল্যে অন্যান্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছে পলি হাউস তৈরি করে শীতকালীন শাকসবজি চাষ করার বিষয়ে এগিয়ে এসেছে। শীতের মরশুমে যেখানে পালং শাক ৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি কিলো বিক্রি হয় সেই পালং শাক এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কিলো। ধনেপাতা শীতকালে বিক্রি হয় ৭০ টাকা প্রতি কিলো এই সময় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতি কিলো। এমনকি যে মূলো শাক শীতকালে বিক্রি হয় ১ থেকে ২ টাকা আটি সেই মূলো শাক এই সময় বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা আটি। কাজেই শীতকালের সবজি চাষ বর্ষাকালে করায় মুনাফা বেড়েছে কয়েক গুণ। যাদের চাষের জমির পরিমাণ কম তাদের মধ্যে পলি হাউস তৈরি করে এই শীতকালীন শাকসবজি চাষের প্রবণতা সবথেকে বেশি। কেননা অল্প পরিমাণ চাষের জমি থেকে বেশি লাভের আশায় অনেকেই শুরু করেছে এই চাষ। তবে বর্ষাকালে জমা জল থেকে ফসলকে বাঁচাতে মাটি দিয়ে উঁচু বেড তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পেতে তৈরি করা হয়েছে পলি হাউস। সাধারণত এই সময় গ্রামবাংলায় পাট এবং ধান চাষের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় কিন্তু এই গ্রামের কিছু সংখ্যক কৃষক গতানুগতিক চাষাবাদে না গিয়ে ভিন্ন ধরনের চাষ করায় বেশ লাভবান হয়েছেন। আগামীতে বিট গাজর ফুলকপির মতো শীতকালীন সবজিও চাষ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ব্লক কৃষি দপ্তরের তরফ থেকে কৃষকদের বরাবরই ভিন্ন ধরনের চাষের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়। আগামীতেও সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের এনে একাধিক ভিন্ন ধরনের চাষবাস করানো হবে বলে কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
Leave a Reply